জ্ঞানচক্ষু প্রশ্ন উত্তর আশাপূর্ণা দেবী সহজ আলোচনা: Gyanchakshu Ashapurna Devi Easy Explain 2025

Published On:
জ্ঞানচক্ষু

📖 আজকের ক্লাসে: আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের সারাংশ ও গুরুত্ব পূর্ণ প্রশ্নোত্তর 🔍

প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা, আজকের ক্লাসে আমরা পড়ব আশাপূর্ণা দেবীর লেখা বিখ্যাত গল্প ‘জ্ঞানচক্ষু’। এই গল্পে দেখানো হয়েছে কিভাবে এক কিশোর সাহিত্যচর্চার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ধীরে ধীরে আত্মমর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে নামল এবং জীবনের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করল। গল্পটি তোমাদের পাঠ্যক্রমের গুরুত্ব পূর্ণ অংশ।

এই পোস্টে তোমরা জানতে পারবে ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের পূর্ণাঙ্গ সারসংক্ষেপ, গল্পের নামকরণের কারণ বিশ্লেষণ এবং পরীক্ষায় বার বার আসা গুরুত্ব পূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর। সব কিছু একসাথে পেয়ে তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতি অনেক সহজ হবে।

🔽 চলো, শুরু করা যাক! ⬇️

জ্ঞানচক্ষু – আশাপূর্ণা দেবী (দশম শ্রেণির পাঠ্য – প্রথম অধ্যায়)

উৎস ও পটভূমি

‘জ্ঞানচক্ষু’ আশাপূর্ণা দেবীর ‘কুমকুম’ গল্পসংকলনের অন্তর্গত একটি উল্লেখযোগ্য রচনা। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই লেখিকা নারীজীবন, সমাজের বাস্তবতা এবং শিশুমনের বিকাশ নিয়ে অনন্য ভাবে লিখেছেন। এই গল্পে ফুটে উঠেছে এক কিশোরের সাহিত্য প্রীতি, কৌতূহল এবং আত্মমর্যাদার চমৎকার প্রকাশ, যা পাঠকদের মুগ্ধ করবে।

জ্ঞানচক্ষু: গল্পের সারাংশ

‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের তপন ছোটোবেলা থেকেই মনে করত, লেখকরা সাধারণ মানুষের মতো নন, তারা যেন এক রহস্যময় দুনিয়ার বাসিন্দা। তাদের ব্যবহার, কথা বলার ভঙ্গি, এমনকি চলাফেরাও নাকি আলাদা। কিন্তু সেই বিশ্বাস ভেঙে যায় যখন সে দেখে তার সদ্য বিবাহিত ছোটো মাসির স্বামী একজন লেখক এবং একদম সাধারণ ভাবে মিশছেন সবার সঙ্গে।

তপন আশ্চর্য হয়ে দেখে, লেখক হওয়া সত্ত্বেও ছোটো মেসো আমাদের মতোই চলাফেরা করেন। ঘুমান, স্নান করেন, দাড়ি কামান, হাসেন মজা করেন। মামা বাড়িতে এসে তপনের লেখা লিখির আগ্রহ বেড়ে যায়। এক দিন সে একটি গল্প লেখে। ছোটো মাসি গল্পটি পড়ে খুশি হয়ে তৎক্ষণাৎ ছোটো মেসোর হাতে তুলে দেন। তিনি পড়ে প্রশংসা করে বলেন, ‘এই গল্পটা আমি সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপাবো।’

তপন খুব আনন্দ আর আশায় দিন কাটাচ্ছিল। কবে তার লেখা ছাপা হবে, সেই প্রতীক্ষায় ছিল। হঠাৎ একদিন ছোটো মাসি ও ছোটো মেসো সন্ধ্যাতারা পত্রিকা নিয়ে এলেন। তপন উৎসাহ নিয়ে পড়তে গিয়ে দেখে, তার লেখা গল্পটি ছাপা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু ছোটো মেসো সংশোধনের নামে পুরো গল্পটাই বদলে ফেলেছেন। এতে তপনের মনে ভীষণ হতাশা ও কষ্ট তৈরি হয়।

গল্পটি পড়ে তপনের মনে হয়, যেন এটি তার নিজের লেখা নয়। এই অনভিপ্রেত অভিজ্ঞতায় সে খুবই দুঃখ পায়। এরপর সিদ্ধান্ত নেয়, ভবিষ্যতে সে নিজেই তার লেখা পত্রিকায় পাঠাবে, যাতে তার পরিশ্রমের কৃতিত্ব অন্য কেউ নিতে না পারে। এই উপলব্ধি থেকেই তপনের মধ্যে “জ্ঞানচক্ষুর” উন্মেষ ঘটে এবং সে আত্মমর্যাদার গুরুত্ব বুঝতে শেখে।

নামকরণের তাৎপর্য

গল্পের নাম “জ্ঞানচক্ষু” খুবই তাৎপর্যময়। তপন শুরুতে মনে করত, লেখকরা সাধারণ মানুষের মতো নন। মামা বাড়িতে গিয়ে সে লেখকদের স্বাভাবিক জীবন যাপন দেখে। পরে নিজের লেখা গল্প পাল্টে প্রকাশিত হওয়ায় সে দুঃখ পায় এবং বুঝতে পারে লেখক হিসেবে নিজের অধিকার ও আত্মমর্যাদার গুরুত্ব। এই উপলব্ধির মধ্য দিয়েই তার জ্ঞানচক্ষুর উন্মেষ ঘটে। তাই নামকরণ যথাযথ এবং গল্পের মর্মার্থকে দারুণ ভাবে তুলে ধরে।

জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রশ্ন উত্তর (Gyanchakshu Ashapurna Devi) অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (MCQ & VSAQ)

১. ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পটি কোন গল্পসংকলন থেকে নেওয়া হয়েছে?
উত্তর: ‘কুমকুম’ গল্পসংকলন থেকে।

২. তপন লেখকদের সম্পর্কে কী ধারণা পোষণ করত?
উত্তর: তপন মনে করত লেখকরা সাধারণ মানুষদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা, যেন তারা এক বিশেষ জগতের মানুষ—যারা আমাদের মতো না, অন্য গ্রহের প্রাণী।

৩. তপনের ছোটমেসো কী কাজ করতেন?
উত্তর: তপনের ছোটমেসো ছিলেন একজন অধ্যাপক এবং খ্যাতনামা লেখক।

৪. তপন কখন প্রথম গল্প লিখতে শুরু করল?
উত্তর: তপন প্রথম গল্প লিখেছিল ছোটোমাসির বিয়ের সময়, যখন সে মামাবাড়িতে ছিল।

৫. কোন পত্রিকায় তপনের গল্প প্রকাশিত হয়?
উত্তর: তপনের গল্প প্রকাশিত হয়েছিল ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায়।

৬. তপন নিজের লেখা গল্প পড়ে হতাশ কেন হয়েছিল?
উত্তর: তপন যখন নিজের গল্প পড়ল, তখন সে অনুভব করেছিল যে তার ছোটোমেসো সংশোধনের নামে পুরো গল্পটাই বদলে দিয়েছে। এমনকি, তার লেখা আর তার নিজের মনে হচ্ছিল না।

৭. গল্পের শেষের দিকে তপন কী সংকল্প করল?
উত্তর: তপন দৃঢ় সংকল্প করেছিল যে, ভবিষ্যতে সে নিজে তার লেখা পত্রিকায় জমা দেবে, যাতে কেউ তার লেখা বদলাতে না পারে এবং তার গল্পে কোনো ধরনের পরিবর্তন না আসে।

৮. ‘জ্ঞানচক্ষু’ নামকরণের কারণ কী?
উত্তর: তপনের সাহিত্যিক জীবন ও আত্মমর্যাদার প্রতি তার উপলব্ধিই তার “জ্ঞানচক্ষু” খুলে দেয়, তাই গল্পের নাম যথার্থ।

এই নোটস তোমাদের জন্য সহজ করে তৈরি করা হয়েছে, যাতে তারা বিষয়টা সহজে বুঝতে পারো। আজকের ক্লাসের গুরুত্ব পূর্ণ বিষয়বস্তু ও সারাংশ এখানে তুলে ধরা হয়েছে। বড় প্রশ্ন, সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন এবং বিস্তারিত প্রশ্ন-উত্তরসহ সম্পূর্ণ আলোচনা পরবর্তী পোস্টে প্রকাশ করা হবে, যাতে তোমরা পরীক্ষার প্রস্তুতিতে আরও সুবিধা পাও।

Mock Test For FreeClick Here
Join the Facebook GroupClick Here
Join Telegram ChannelClick Here

Follow Us On

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.