মাধ্যমিক পাশ করেছো? আজকের এই নিবন্ধে আমরা মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য বিদ্যমান সরকারি ও বেসরকারি স্কলারশিপের তালিকা থেকে সেরা পাঁচটি বেছে নিয়েছি। এই স্কলারশিপ গুলির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার জন্য আর্থিক সহায়তা পাবে। প্রতিটি স্কলারশিপের নাম, অনুদানের পরিমাণ, কারা আবেদন করতে পারবে এবং কীভাবে আবেদন করতে হবে সব বিস্তারিত তথ্য এখানে জানানো হয়েছে।
Contents
মাধ্যমিক পাশের পর সর্বোত্তম ৫টি স্কলারশিপ
❏ বিকাশ ভবন স্কলারশিপ অথবা স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট কাম মিন্স স্কলারশিপ
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা দপ্তর এবং উচ্চ শিক্ষা বিভাগ প্রতি বছর এমন মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের জন্য এই স্কলারশিপ চালু রেখেছে, যারা আর্থিক সমস্যার কারণে পড়াশোনায় অসুবিধার মুখে পড়ে। মাসিক ১,০০০ টাকা অনুদান দেওয়া হয়, এবং এই বৃত্তি পাওয়ার জন্য মাধ্যমিক বা সমপর্যায়ের পরীক্ষায় কমপক্ষে ৬০% নম্বর থাকা আবশ্যক।
বৃত্তির জন্য প্রার্থীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে এবং তার পরিবারের বাৎসরিক আয় ২,৫০,০০০ টাকার কম হতে হবে। এছাড়া, যারা ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের ‘নবান্ন’ স্কলারশিপ বা অন্য কোনো সরকারি স্কলারশিপ পাচ্ছেন, তারা এই স্কলারশিপ এর আওতায় পড়বেন না।
এই স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য প্রার্থীকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট svmcm.wbhed.gov.in-এ গিয়ে নির্ধারিত আবেদন পত্র পূরণ করতে হবে। সম্পূর্ণ আবেদন প্রক্রিয়াটি অনলাইনের মাধ্যমেই সম্পন্ন হবে।
❏ নবান্ন স্কলারশিপ
দারুণ সুযোগ! পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে প্রতিবছর মেধাবী এবং দারিদ্র্য পীড়িত ছাত্র ছাত্রীদের জন্য ‘নবান্ন’ এবং ‘উত্তরকন্যা’ স্কলারশিপ প্রদান করা হয়। ‘নবান্ন’ দক্ষিণবঙ্গের শিক্ষার্থীদের জন্য এবং ‘উত্তরকন্যা’ উত্তরবঙ্গের জন্য। এই স্কলারশিপের মাধ্যমে প্রতি বছর ১০,০০০ টাকা অনুদান প্রদান করা হয়। যেসব ছাত্র ছাত্রীর মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর ৫০%-৬০% এর মধ্যে, তারা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারেন।
এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হলে, প্রার্থীকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী নাগরিক হতে হবে। পাশাপাশি, প্রার্থীর পরিবারের বার্ষিক আয় ১,২০,০০০ টাকার নিচে থাকা আবশ্যক। তবে, যারা ইতিমধ্যে বিকাশ ভবন বা অন্য কোনো সরকারি স্কলারশিপ এর সুবিধা ভোগী, তারা এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। যদি তুমি বিকাশ ভবন বা অন্য কোনো সরকারি স্কলারশিপ পাচ্ছ, তবে আবেদন করা যাবে না।
এটি একটি অফলাইন আবেদন পদ্ধতি। এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হলে একটি অফলাইন পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। প্রার্থীদের আবেদনপত্র এবং প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র সঠিক ভাবে পূরণ করে, দক্ষিণবঙ্গের ছাত্রছাত্রীরা ‘নবান্ন’ অফিসে এবং উত্তরবঙ্গের ছাত্রছাত্রীরা ‘উত্তরকন্যা’ দপ্তরে ডাক যোগে অথবা সরাসরি জমা দিতে হবে। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে, পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য সঠিক নির্দেশনা পাওয়া যাবে।
❏ ঐক্যশ্রী স্কলারশিপ
পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের (বৌদ্ধ, মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ, জৈন, পার্সি) ছাত্র ছাত্রীদের মেধা বিকাশের জন্য ‘ঐক্যশ্রী স্কলারশিপ’ চালু করা হয়েছে, যা পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও অর্থ কর্পোরেশন কর্তৃক পরিচালিত। এই স্কলারশিপে প্রার্থীদের সর্বাধিক ১৬,৫০০ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। আবেদনকারীদের মাধ্যমিকে অন্তত ৫০% নম্বর পেতে হবে।
এই স্কলারশিপে এর জন্য আবেদন করতে হলে, প্রার্থীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। পাশাপাশি, পরিবারের বার্ষিক আয় সর্বোচ্চ ২,০০,০০০ টাকার মধ্যে সীমা বদ্ধ থাকতে হবে।
এখনই অনলাইনে আবেদন করুন! এই স্কলারশিপের জন্য আবেদনটি পুরোপুরি অনলাইনে করা যাবে। আবেদনপত্র পূরণের পর, আবেদনকারীদের অবশ্যই তার প্রিন্ট আউটসহ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর, আইএফএসসি কোড এবং পাসবইয়ের ফটোকপি সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জমা দিতে হবে। এই প্রক্রিয়া মিস করলে আবেদন বাতিল হতে পারে। সুযোগ হাতছাড়া করবেন না!
❏ সীতারাম জিন্দাল স্কলারশিপ
সীতারাম জিন্দাল ফাউন্ডেশন পরিচালিত এই বৃত্তি কর্মসূচির মাধ্যমে উচ্চশিক্ষা করতে ইচ্ছুক অথচ আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা ছাত্র ছাত্রীদের ৫০০ থেকে ২,৫০০ টাকা পর্যন্ত সহায়তা প্রদান করা হয়। এই স্কলারশিপ এর জন্য ছেলেদের মাধ্যমিকে ন্যূনতম ৭০% এবং মেয়েদের ৬৫% নম্বর থাকা বাধ্যতামূলক। নির্বাচিত প্রার্থীদের এককালীন অর্থ প্রদান করা হয়।
আবেদন করতে হলে নির্ধারিত আবেদনপত্র সঠিক ভাবে পূরণ করতে হবে। সঙ্গে মাধ্যমিকের মার্কশিট, পরিচয় পত্র, ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র সংযুক্ত করে সীতারাম জিন্দাল ফাউন্ডেশনের নির্ধারিত ঠিকানায় ডাক যোগে পাঠাতে হবে। অনলাইনে কোনো আবেদন গ্রহণ যোগ্য নয়।
❏ অনন্ত মেরিট স্কলারশিপ
‘অনন্ত এডুকেশন ইনিশিয়েটিভ’ নামের একটি স্বতন্ত্র বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এই বৃত্তি পরিচালনা করে। প্রতি বছর নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ৬,০০০ টাকা আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়, যা পড়াশোনার খরচ ও অন্যান্য প্রয়োজন মেটানোর জন্য দেওয়া হয়।
এই স্কলারশিপের জন্য শুধু মাত্র সে সব পরীক্ষার্থীরাই আবেদন করতে পারবেন, যাঁরা মাধ্যমিক পরীক্ষায় ন্যূনতম ৭০% নম্বর অর্জন করেছেন এবং যাঁদের পরিবারের মোট মাসিক আয় ৫,০০০ টাকার কম। আবেদন পত্র জমা দেওয়ার সময় উপযুক্ত প্রমাণ পত্র দাখিল করাও বাধ্যতা মূলক।
এ ক্ষেত্রে আবেদন পত্র জমা দেওয়ার জন্য অনলাইন ও অফলাইন দুই ধরনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অনলাইনে আবেদন করতে হলে অনন্ত মেরিট ফাউন্ডেশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে নির্ধারিত ফর্ম পূরণ করতে হবে। অন্য দিকে, অফলাইনে আবেদন করতে হলে আবেদন পত্রটি ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করে সঠিক ভাবে পূরণ করে নির্ধারিত কাগজ পত্র সহ ডাক যোগে ঠিকানায় পাঠাতে হবে।
মনে রাখবেন, প্রতিটি স্কলারশিপের আবেদনের যোগ্যতা এবং শর্তাবলি সময়ভেদে পরিবর্তিত হতে পারে। তাই, আবেদনপূর্বে নির্ভরযোগ্য উৎস বা নিকটবর্তী সাইবার ক্যাফেতে যোগাযোগ করে সর্বশেষ তথ্য যাচাই করে নেবেন।
Important Links
Mock Test For Free | Click Here |
Join the Facebook Group | Click Here |
Join Telegram Channel | Click Here |